Tag Archives: health tips

হেলদি বাদাম- খেজুরের মিল্কশেক

হেলদি বাদাম- খেজুরের মিল্কশেক

আমাদের সব মায়েদের একটি কমন অভিযোগ বাচ্চা দুধ খেতে চায়না। কিন্তু বাচ্চাদের মেধা বিকাশের জন্য দুধ অপরিহার্য। বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য মায়েরা কতো কিছুই না করে থাকি।

আর তাই মায়েদের জন্য আজ নিয়ে এসেছি দুধের একটি সহজ এবং পুষ্টিতে ভরপুর ঝটপট রেসিপি।

আজ আমরা বানাবো বাদাম-খেজুরের মিল্কশেক। এই মিল্কশেকটি শুধু বাচ্চাদের জন্য নয় বরং পরিবারের সবার জন্য পুষ্টিগুনে ভরা একটি মিল্কশেক।

👉 চলুন বানানো যাক মজাদার হেলদি বাদাম-খেজুরের মিল্কশেক :

যা যা লাগছে :

১.দুধ ২ কাপ

২. খেজুর ৪ টা

৩. মধু পরিমান মতো

৪. কাঠ বাদাম ৬-৭ টা

৫. কাজুবাদাম ৬-৭ টা

৬. পেস্তা বাদাম ৬-৭ টা

প্রস্তুত প্রনালি :

একটি বাটিতে সামান্য পরিমান দুধ নিয়ে তার মধ্যে কাঠ বাদাম, কাজুবাদাম বাদাম, পেস্তা বাদাম ১০ -১৫ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখি। এরপর ২ কাপ দুধ ভালোভাবে ফুটিয়ে গরম করে ঠান্ডা হবার জন্য অপেক্ষা করি।

অতঃপর একটা ব্লেন্ডারে ঠান্ডা হওয়া দুধ, ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম, খেজুর, এবং পরিমান মতো মধু দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করি।

ব্যস রেডি হয়ে গেলো মজাদার হেলদি বাদাম – খেজুরের মিল্কশেক।

মিল্কশেক তো বানানো হলো এবার জেনে নেয়া যাক এর পুষ্টিগুন :

* দুধ এর পুষ্টিগুন : দুধকে আদর্শ খাদ্য বলা হয়। গরুর দুধে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন – এ,ডি,কে, ই রয়েছে।

উপকারিতা :

* দুধ শরীরে শক্তি সরবরাহ করে।

* দুধে থাকা ক্যালসিয়াম হাঁড়কে মজবুত করে।

* শিশুর মেধা বিকাশে সাহায্য করে।

* মানসিক চাপ দূর করে হার্টকে ভালো রাখে।

* এসিডিটির সমস্যা দূর করে।

* ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রন, ডায়াবেটিস এর সমস্যা, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়।

বাদাম এর পুষ্টি গুন : বাদামে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন- ই, সি, অ্যামাইনো এসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ওমেগা -থ্রি।

উপকারিতা :

* বাদাম মেধা বিকাশে সাহায্য করে।

* ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে সাহায্য করে।

* হার্টের নানান অসুখ থেকে রক্ষা করে।

* ডিপ্রেশন কমাতে সাহায্য করে।

* ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করতে বাদাম সাহায্য করে থাকে।

* হাঁড় ও পেশিকে মজবুত করে।

খেজুরের পুষ্টিগুন : খেজুরে ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন – এ, বি, কে, আয়রন রয়েছে।

উপকারিতা :

* খেজুর শরীরে শক্তি যোগায়।

* খাওয়ার রুচি বাড়ায়।

* খেজুর রক্তশূন্যতা দূর করে।

* হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।

* চোখ ভালো রাখে।

* যকৃত সুস্থ রাখে।

মধুর পুষ্টিগুন : প্রাকৃতিক ৪৫ টি খাদ্য উপাদান রয়েছে মধুতে।

উপকারিতা :

* মধু হজমে সাহায্য করে।

* অনিদ্রা দূর করে।

* শরীরে তাপ ও শক্তি যোগান দেয়।

* রক্তশূন্যতা দূর করে।

* কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে।

* ডায়রিয়ায় পানিশূন্যতা দূর করে।

* হাঁপানি, ফুসফুসের সমস্যা, এলার্জি জনিত ঠান্ডা, কাশি নিরাময় করে।

আজকের বানানো বাদাম- খেজুরের মিল্কশেক এর প্রতিটি উপাদান পুষ্টিগুনে ভরপুর। খুব সহজেই এবং কম সময়ে বানানো যায় এই মিল্কশেক টি।

তাই এক গ্লাস বাদাম- খেজুরের মিল্কশেক হতে পারে বাচ্চা থেকে শুরু করে পরিবারের সবার জন্য এক আর্দশ ড্রিংকস।

গরমে শিশুর যত অসুখ

গ্রীষ্মের শুর থেকেই চলছে তাপপ্রবাহ। সূর্যের প্রখরতা যেনো কমছেই না। অতিরিক্ত এই গরমে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে আমাদের পরিবারের ছোট সদস্যরা।

গরমকালে বাচ্চাদের নানান ধরনের অসুখ হয়ে থাকে। তাই বাবা- মায়েদের দুশ্চিন্তায় বেড়ে যায়।

গরমে বাচ্চাদের যেসব অসুখ হতে পারে আজ সে বিষয় নিয়ে ধারনা দেবার চেষ্টা করেছি ব্লগ টিতে।

👉 ডায়রিয়া : গরমে বাচ্চাদের ডায়রিয়া হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এসময় বাচ্চাদের খাবার হজমে অসুবিধা, বমি হতে পারে। ডায়রিয়া হলে বাচ্চাকে একটু পর পর স্যালাইন খাওয়াতে হবে। এছাড়া ডাবের পানি, বিশুদ্ধ খাবার পানিও খেতে দিতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

👉 জ্বর : অতিরিক্ত গরমের জন্য শিশুদের জ্বর হতে পারে। তবে জ্বর কোনো অসুখ নয় বরং এটি যেকোনো অসুখের উপসর্গ। ভাইরাস জনিত সংক্রমন, ঠান্ডা ইত্যাদি কারনে জ্বর হতে পারে। যদি জ্বর ১০৩ ডিগ্রি এর বেশি হয় তবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। শিশুদের শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায় তাই লক্ষ্য রাখতে হবে।

👉 হিটস্ট্রোক : মাত্রারিক্ত গরমে শিশুদেরও হিটস্ট্রোক হতে পারে। শিশুর শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর বেশি হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। এসময় শিশুর চোখে ঝাপসা দেখা, মাথা ব্যাথা, দ্রুত শ্বাস নেয়া, জ্ঞান হারানো, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, খিঁচুনি হতে পারে।

👉 সর্দি, কাশি : গরমে অতিরিক্ত ঘামের জন্য শিশুদের ভাইরাসজনিত সর্দি, কাশি হতে পারে। তাই এসময় বেশি বেশি ভিটামিন – সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে দিতে হবে এবং অতিরিক্ত যেনো না ঘামে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

👉 নিউমোনিয়া : গ্রীষ্মকালে গরমের কারনে বাচ্চাদের নিউমোনিয়া হতে দেখা যায়। এ সময় বাচ্চাদের সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বমি ঘন ঘন হলে তা নিউমোনিয়াতে রূপ নেয়। নিউমোনিয়ার লক্ষণ গুলো দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

👉 ঘামাচি : গরমে বাচ্চারা অনেক ঘেমে যায়। ফলে এই সময়টি তে ঘামাছি হতে পারে। সাধারনত ঘামাচি দেহের বড় অংশ জুড়ে হয়ে থাকে। আবার কখনো বাচ্চার ঘাড়, গলা, পিঠ, বুকে লাল লাল গোটার মতো ঘামাচি হয়ে থাকে। মাঝে মাঝে ঘামাচি থেকে পুঁজ ও বের হতে পারে। তাই সব সময় সুতির পাতলা কাপড় পরাতে হবে, প্রয়োজনে শরীর স্পঞ্জ করে দিতে হবে, বেবি পাউডার ব্যবহার করতে হবে।

👉 র‌্যাশ : আধুনিক যুগে বাচ্চাদের ডায়াপার পড়ানো হয়ে থাকে। তবে গরমকালে ডায়াপার ব্যবহারের ফলে পরিহিত স্থানে বাচ্চাদের র‌্যাশ দেখা দিতে পারে। ডায়পার পড়ানোর ফলে পরিহিত স্থানে বাতাস চলাচল করতে পারেনা ফলে ঘামে ভিজে থাকে। দীর্ঘ সময় ভিজা থাকার কারনে ওই স্থানে লাল রংয়ের র‌্যাশ দেখা দেয়, চুলকানি হয় এবং জ্বালাপোড়া করে। তাই গরমে ডায়পার পরালেও লক্ষ্য রাখতে হবে যেনো একটি ডায়পার দীর্ঘক্ষন না পরিয়ে রাখা হয় এবং পরিহিত স্থান ঘেমে যেনো না থাকে।

👉 জ্ঞান হারানো : তীব্র তাপদাহে বাচ্চার শরীর থেকে ঘামের সাথে পানি ও লবন বের হয়ে যায়। ফলে শরীরে পানি ও লবনের ঘাটতি দেখা দেয়। এমন অবস্থায় বাচ্চা জ্ঞান হারাতে পারে। তাই বাচ্চাদের বেশি বেশি খাবার পানি, শরবর৷ ডাবের পানি, নানান ধরনের ফলের জুস খাওয়াতে হবে একটু পর পর।

👉 হাম, জলবসন্ত : ১-৫ বছর বয়সী বাচ্চাদের গরমকালে হাম, জলবসন্ত হতে দেখা যায়। এসময় বাচ্চাকে সুতির ঢিলেঢালা পোশাক পরাতে হবে, বেশি বেশি তরল খাবার খেতে দিতে হবে, যথা সম্ভব ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে। আর অবশ্যই সঠিক সময়ে হামের টিকা দিতে হবে বাচ্চাকে।

দিন যত যাচ্ছে গরমের প্রখরতা তত বাড়ছে। আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নানান রোগের আর্বিভাব। তাই বাচ্চাদের সুস্থ রাখতে সবাইকে থাকতে হবে সচেতন এবং নিতে হবে বাড়তি যত্ন।